স্যার আর্থার কোনাল ডায়েলের সৃষ্ট গোয়েন্দা শার্লক হোমস। শার্লক হোমসের গোয়েন্দা কাহিনীগুলো একশ বছরের বেশি পুরনো হলেও আজো বিভিন্ন সমস্যার সমাধান চেয়ে তার কাছে চিঠি আসে। মানুষ খুঁজে বেড়ায় ২২১ বি. বেকার স্ট্রিট। যে ঠিকানার বাস্তব কোনো অস্তিত্ব কখনোই ছিল না।
পৃথিবীর মানুষের সামনে শার্লক হোমস প্রথম আসেন ১৮৮৭ সালে। এই জনপ্রিয় সিরিজের লেখক স্যার আর্থার কোনাল ডায়েল। তিনি পেশায় একজন ডাক্তার। গোয়েন্দা শার্লক হোমস নিয়ে তিনি ‘এ স্টাডি ইন স্কারলেট’ বইটি যখন লিখেন তখন এটা ছাপানোর মতো প্রকাশককে খুঁজে পাননি। অনেক চেষ্টা করে একটি ম্যাগাজিনে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ করেন হোমসের অ্যাডভেঞ্চারের প্রথম বর্ণনা। সব মিলিয়ে শার্লক হোমসকে নিয়ে ৪টি উপন্যাস ও ৫৬টি ছোট গল্প লিখেছেন আর্থার কোনাল ডায়েল। চোখের ডাক্তার হিসেবে খুব বেশি জনপ্রিয় না হলেও লেখক হিসেবে ডায়েল জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন এবং এক সময় তার লেখা চরিত্র শার্লক হোমস তার চেয়ে বেশি পরিচিত হয়ে ওঠে। আর্থার কোনাল ডায়েল যখন স্কটল্যান্ডের এডিনবার্গে রয়েল ইনফর্মাজিতে কাজ করতেন তখন জোসেফ বেল নামে একজনের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। জোসেফ বেলের গোয়েন্দাসুলভ মনোভাব তাকে লিখতে উৎসাহিত করে এবং তার মনের ভেতর থেকে শার্লক হোমসের জš§ হয়। সে হিসেবে গোয়েন্দা শার্লক হোমসের জš§ ১৮৫৪ সালের দিকে। হোমসের এক ভাই মাইক্রোসফট হোমস। দাদী ফরাজি শিল্পী ভারনেটেজ গেন। শার্লক হোমসের সঙ্গী হলেন ডাক্তার ওয়াটসন। যিনি শার্লক হোমসের গোয়েন্দা কাহিনীগুলো সবাইকে জানাতেন। এ ছাড়া রাস্তার একদল ছেলেদের সঙ্গে তার খুব ভাব ছিল। এদের নাম হোমস দিয়েছিলেন ‘দি বেকার স্ট্রিট ইরেগুলার্স।’ শার্লক হোমসের জ্ঞান ও বুদ্ধি দূরন্ত প্রখর। অবসর সময়ে তিনি ভায়োলিন বাজাতে পছন্দ করতেন। একজন বক্স এবং তলোয়ারবিদ হিসেবে তিনি যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছিলেন। তার অ্যাডভেঞ্চারের সময় সঙ্গী থাকত পিস্তল, পাইপ, ম্যাগনিফাই গ্লাস ও ডিয়ার স্ট্যাকাজ ক্যাপ। যে কোনো বিষয়ে ভয়শূন্য থাকা মানুষের মন বুঝে ফেলা এবং বন্ধুত্ব করা তার সহজাত গুণ। সিরিজের গল্পে হোমস ২২১ বি. বেকার স্ট্রিটের ঠিকানায় থাকা শুরু করেন ১৮৮১ সালের দিকে। ১৯০৪ সাল পর্যন্ত এখানে থাকেন তিনি। তখন বাড়ির মালিক মিসেস হাডসন হোমস সেখানে ভাড়া থাকতেন। শার্লক হোমস সব সময়ই ব্যস্ত থাকতেন। তবে কোনো কেস পছন্দ না হলে প্রচুর টাকা দিলেও তিনি সেটা ফিরিয়ে দিতেন। শার্লক হোমস সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছেন পুলিশকে। ওয়াটসনের বক্তব্য অনুসারে হোমসের গুরুত্বপূর্ণ ৫৩টি কেসের মধ্যে ৪৯টির ক্রেডিট নিয়েছে পুলিশ। এতে অবশ্য হোমস কিছুই মনে করেননি। শার্লক হোমস এক সময় সবার কাছে এত বেশি কাক্সিক্ষত হয়ে ওঠেন যে, তার লেখক আর্থার কোনাল ডায়েল হাঁপিয়ে ওঠেন। ‘দি ফাইনাল প্রবলেম’ বইয়ে হোমসের মৃত্যু হলে পাঠকদের তীব্র প্রতিবাদে আবার তাকে ফিরিয়ে আনেন লেখক।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস