গল্পটির শুরু হয়েছে কারখানার শ্রমিকদের দৈনন্দিন নিদারুন কষ্টের আর একঘেয়ে জীবনের বর্ণনা দিয়ে । যেখানে নেই কোনো আনন্দ , নেই কোনো উচ্ছাস । যেখানে প্রতিদিন কারখানার যন্ত্র তাদের ভিতরকার রক্ত চুষে নিচ্ছে , তাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মৃত্যুর গহ্বরের দিকে । তাদের কোনো ইচ্ছা ছিল না এই জীবনধারাকে পরিবর্তন করার । তাদের জীবন চলে যন্ত্রকে নিয়ে , নিজেদের মধ্যে কথাবার্তাও হয় যন্ত্রকে নিয়ে । এভাবেই তারা যন্ত্রমানবে রূপান্তর হয় , যে মানবের ভিতরে কোনো আবেগ নেই , নেই কোনো উচ্ছ্বাস । তাদের মন ব্যাধিগ্রস্ত হয়ে পড়ে দারিদ্রতার কারণে ।
তেমনি এক অসুস্থ মনের মানুষ ছিল মিখাইল ভ্লাসভ । মিখাইল ভ্লাসভ একজন শ্রমজীবী মানুষ ছিলেন , যে কিনা তারই স্ত্রী পেলাগোয়া নিলভনাকে নিদারূন যন্ত্রণা দিত আর মারধোর করত । মিখাইল ভ্লাসভের মৃত্যুর পর তারই ছেলে পাভেল মিখাইলভিচ শ্রমজীবী মানুষদের জীবনে এক বড় পরির্বতনের জন্য নিজেকে সঁপে দেয় ।
পাভেল ভ্লাসভ অন্য সব শ্রমজীবী মানুষদের মত না । সে সারাদিন খেটে রাতে এসে ঘরের কোনায় বই নিয়ে বসে । মাইনের টাকা প্রায় সবই মায়ের হাতে তুলে দেয় । চিন্তিত মা সর্বদা নিজের ছেলের জন্য উদ্বিগ্ন হয়ে থাকে । মা বুঝতে চাইলে ছেলে বলে সে শ্রমিকদের শেখাতে চায় , তাদের জীবনে এত কষ্ট কেন জানাতে চায় । মা ভয় পেয়ে যায় একা একা তার ছেলে কীভাবে পারবে এত বড় কাজ করতে । কিন্তু একা পাভেলই নয় এ কাজে নাতাশা , নিকলাই , রীবিন , সোফিয়া সিজভ এমনিই আরও অনেকে সহায়তা করে । ধীরে ধীরে মা বুঝে কত বড় কাজে হাত দিয়েছে তার ছেলে । একসময় নিজেও ছেলেকে সহায়তা করার জন্য এগিয়ে আসে । নিজের জীবনে যে এক আমূল পরির্বতন আসে মা সেটা বুঝতে পারে । ধীরে ধীরে নিজের মনের আত্মবিশ্বাস বেড়ে ওঠে ।
পাভেলের সাথে সহায়তাকারী সঙ্গীদের সাথে কীভাবে জানি এক ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে । পাভেলকে যখন আন্দোলনের মধ্যে পুলিশ ধরে নিয়ে যায় তখন মা চিৎকার করে সবাইকে বলে তার ছেলে আজ শ্রমজীবী মানুষদের জীবন দিতে পথে নেমেছে । সত্যের জীবন দিতে , ন্যায়ের জীবন দিতে । তাদেরকে বলে তার ছেলে আজ সবার জন্য , সারা দুনিয়ার শ্রমিকদের জন্য লড়ছে । ছেলে এই সত্যের পথে নেমেছে বলে মা আজ গর্বিত ।
কিন্তু এরই মধ্যে পাভেলকে সাইবেরিয়ায় যাবজ্জীবন নির্বাসন দেয় । এরপর? এরপরের কাহিনী জানতে হলে পড়ুন ম্যাক্সিম গোর্কির বিখ্যাত উপন্যাস ‘মা’….
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস